নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে মার্কা বেঁচে তারা জীবিকা নির্বাহ করে
কম দাম হওয়ায় বেশি করে কিনে রাখছেন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা

নভেল চৌধুরী ♦ ছুটির দিন শুক্রবারও টাউনহল মাঠ ছিল সরগরম। আজ শুক্রবার ছিল রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের দিন। প্রার্থী-সমর্থক, দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে রংপুর টাউনহল হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
আর এই উৎসবমুখর পরিবেশকে আরও বেশি রাঁঙিয়েছে ব্যতিক্রমী “নির্বাচনী মার্কা বিক্রির বাজার”। আর সেই মার্কা-ব্যাজ কিনতে হুমড়ি পড়ে লেগেছেন বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকবৃন্দ। মার্কার বাজারে ছিল প্রতীক-সংবলিত কাগজে রঙিন প্রিন্টে লেমেনেটিং করা কার্ড, গলায় ঝোলানোর জন্য রঙিন ফিতা, বুকে লাগানোর জন্য বিভিন্ন প্রতীক ডিজাইন করা ব্যাজসহ প্রচার-প্রচারণায় ব্যবহৃত অনেক পণ্য। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রংপুর টাউনহল মাঠে এ চিত্র দেখা যায়।
সেখানে নির্বাচনী মার্কার ব্যাজের দোকান দেয়া মাদারিপুরের শিবচর থানাধীন সরনারশীরচর গ্রামের মনির হোসেন বলেন, রংপুরে নির্বাচনের কথা শুনে গতকাল রাত ৮টায় ট্রেনে করে মাদারিপুর থেকে রওনা হয়েছি। আমার ব্যবসা এটাই। নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে গিয়ে আমি বুকে লাগানো বিভিন্ন প্রতীকি ব্যাজ, লেমেনেটিং করা রঙিন কার্ড বিক্রি করে সংসার চালাই।
লাভ কেমন হয় জানতে চাইলে ব্যবসায়ী হোসেন জানান, বুকে লাগানো প্রতীকি ব্যাজ কেনা পড়ে ১১ থেকে সাড়ে ১১ টাকা। কিন্তু আমার যাতায়াত, খাওয়া খরচ এসব মিলিয়ে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ টাকা প্রতি পিছে পড়ে যায়। যার কারণে আমি খুচরা হিসেবে ২০ টাকা পিছ এবং পাইকারী নিলে ১৬ থেকে ১৭ টাকা প্রতি পিছ ধরে থাকি।
হুজাইফা ইসলাম নামে আরেক ব্যবসায়ীর কাছে জানা যায় তিনি ময়নমনসিংহের গৌরিপুর থেকে এসেছেন। গতকাল রাতে তিনি বাসে চড়ে রংপুরে আসেন। তিনি বলেন, আমি মূলত ময়মনসিংহ উপজেলা সদর মসজিদের মুয়াজ্জিন। তবে ভাইয়ের ব্যবসায় সাহায্য করতে এবং রংপুর শহর ঘুরতে আমি এখানে এসেছি। রংপুরের মানুষজন খুব আন্তরিকতার সাথে আমাদের পণ্যগুলো কিনছেন। তাদের আচরণও অনেক সুন্দর।
২০ বছর বয়সী ইমরান হোসেন নামে এক তরুণ ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ময়নমনসিংয়ে সদরের শিকদারবাড়িরর আরমান হোসেনের ছেলে। আমি অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতেই আমি এ ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছি। আমি লেমেনেটিং করা গলায় ঝোলানোর রঙিন কার্ড বিক্রি করছি। প্রতি পিছ মাত্র ৫ টাকা হওয়ায় সকলে বেশি বেশি করে কিনছেন।
নির্বাচনী প্রতিকী কার্ড ও ব্যাজ কিনতে আসা লিয়াকত সিদ্দীকি জানান, এগুলো বাজারে কিনতে গেলে এর চেয়ে বেশি দামে কিনতে হয়। এখানে অনেক কম দাম হওয়ায় বেশি করে কিনলাম। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কর্মী-সমর্থকদের মাঝে এগুলো আমরা বিতরণ করব।